মা মারা গেছে চার মাস হয়।বাবা আবারও বিয়ে করেছেন। আমার বড় ভাই মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করে দুই বছর আগে মারা যায়।এরপর থেকে মা কেমন যেন পাগলের মতো হয়ে যায়। বাবা তখন থেকে মায়ের সাথে আগের মতো ভালো ব্যবহার করতেন না।মায়ের উপর কথায় কথায় রাগ দেখাতেন।মা এইসব সহ্য করতে না পেরে আরও অসুস্থ হয়ে যায়। মামা কয়েকবার ডাক্তার দেখায়।কিন্তু কোনো লাভ হয় না।কীভাবে হবে?ডাক্তার মা’কে চিন্তা মুক্ত থাকতে বলেছে। কিন্তু মায়ের তো চিন্তার শেষ নাই। আগে ভাইকে নিয়ে চিন্তা ছিল। এখন আমাকে নিয়ে।
আমার বয়স মাত্র পনেরো বছর। কিন্তু বাবা আমার বিয়ের জন্য পাত্র দেখাদেখি করছেন।তার পছন্দ আমার বা মায়ের পছন্দ হয় না।কারণ সে নিজে যেমন।তার পছন্দও তেমন।মা শুধু বলতো ভালো করে পড়ালেখা কর।এসএসসি পাশ করলে ঢাকায় মামার বাসায় রেখে কলেজে পড়াবে।মায়ের সবকিছু বিক্রি করে হলেও পড়াবে।আমি আর মা মুক্তির স্বপ্ন দেখতাম।মা ছিল আমার সাহস। আমার শক্তি যা ছিল তা ছিল আমার মা।ভাই বেঁচে থাকলে সত্যি আমাকে আর মা’কে নিয়ে চলে যেত দূরে। প্রতি রাতে আমি মা’কে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখি। মা যেন আমার মাঝে ভাইকে পায়।আমি যেন মায়ের বুকে নিরাপদ আশ্রয় পাই।
হঠাৎ বাবা মায়ের সাথে খুব ভালো ব্যবহার শুরু করলেন। একদম আগের মতো। আমার সামনে মায়ের কাছে ক্ষমা চাইলেন।মা আর আমার জন্য অনেক কিছু আনেন বাজার থেকে। আমার আড়ালে মায়ের সাথে বেশ রসিকতাও করেন দেখেছি।মা-ও অনেক ভালো থাকে এখন।আগের মতো বাবার আর আমার পছন্দের খাবার রান্না করে। তবে মা আড়ালে ভাইয়ের কথা মনে করে কাঁদে। ভাইয়ের পছন্দের খাবার রান্না করে মসজিদে আর এতিমখানায় দেয় প্রায়ই। এতে ভাই ও মা দুইজনের মনেই মনে হয় শান্তি আসে।
এখন রাতে মা আমার সাথে ঘুমায় না।মাসখানেক হয় বাবা-মা একসাথে থাকে।হঠাৎ একরাতে মায়ের মৃত্যু হলো।বাবা বলল,মায়ের নাকি বুকে ব্যাথা শুরু হয়।বাবা পানি আনতে যায় মায়ের জন্য। এসে দেখে আর নেই মা।আমি তখন কিছুই বুঝতে পারি নাই। মা ‘কে হারানোর শোকে পাথর হয়ে যাই।অন্য কিছু ভাবতে পারি নাই। সবাই বলল,ছেলের শোকে হার্ট অ্যাটাক করেছে।আমারও অন্য কিছু মনে হয়নি।সব আপনজন হারানোর কষ্টে আমার তখন জ্ঞান নাই। মামা এসে কিছু দিনের জন্য তার বাসায় নিয়ে গেলেন।
বাড়িতে ফিরে এসে দেখি বাবা আবার বিয়ে করেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর কে আমাকে আর বাবাকে দেখবে? আমাকে কেউ কিছু জানালো না।আমার বাবার বউয়ের বসয় আমার মতো।এত ছোট মেয়েকে বিয়ে দিল বাবার মতো বয়স্ক লোকের সাথে! আমি রাগে ঘৃণায় বাবার কাছে কিছু জানতে চাইনি।বাবা আমার কাছে মেয়েটিকে এনে বলল, এটা তোমার নতুন মা।তোমার ভালোর কথা চিন্তা করে বিয়ে করতে হলো।একা এত বড় মেয়ে বাড়িতে রাখা তো ঠিক না।তোমার সাথে কাউকে না কাউকে তো লাগবে।দুইজন দুইজনকে দেখে রাখবা।
মেয়েটার মুখে কোনো হাসি নাই।মলিন একটা মুখ।হাজারো কষ্ট যেন জমা ঐ চোখে। অনেক কথা বলা জমা মনে।আমি সেদিন মেয়েটাকে চোখের পানি গোপন করতে দেখি।কিন্তু রাগে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকি।আমার মায়ের সাজানো গোছানো সংসারে কেন এসেছে এই মেয়ে? আমার মায়ের জায়গা কেউ পাবে না।মেয়েটা শুধু বলল,আপনার কিছু লাগলে আমাকে বলবেন।বাবা বলল, আপনি করে কেন বলো? তুমি করে বলো।তোমার মেয়ে হয় সে।আমি রাগে ঘৃণায় ঘর থেকে বের হয়ে যাই।এই লোকটা আমার বাবা! এই লোক আমার বাবা না হয়ে আজ এতিম হলেই ভালো হতো।
রাতে কার যেন কান্নার আওয়াজ পাই।ভয় হয় তাই একা রাতে বের হই না। একদিন সাহস করে বের হলাম।দেখি মেয়েটা বারান্দায় বসে কাঁদছে। তার কপালে হাত দিয়ে বসে আছে।আমার ঘরে নিয়ে আসলাম।কারণ বাবার ঘরে দরজা বন্ধ দেখলাম। আলো জ্বালিয়ে দেখি কপালের একপাশে ফোলা।বুঝতে পারলাম বাবা হয়তো আঘাত করেছে। মেয়েটার গলায় লাল লাল দাগ।কামড়ের দাগ মনে হলো।আমার গা শিউরে উঠলো।একটা মানুষ এতটা পশু হয় কী করে? আমি মেয়েটাকে আমার ঘরে থাকতে বলি। এতরাতে বাহিরে থাকা ঠিক হবে না।তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। কিন্তু একটা মেয়ে তো সে।তাই হয়তো মায়া হলো।মেয়েটা জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে থাকলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মেয়েটা ঘরে নেই।বাহিরে গিয়ে দেখি রান্না করছে।অবাক হলাম কতটা কষ্ট জমা মনে।অথচ বোঝার উপায় নেই। ঠিক করলাম নিজেরও একা একা ভালো লাগে না।মেয়েটার সাথে কথা বলবো।সেদিন বাবা তো নামটাও বলেননি মেয়েটার।আমি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম নাম কী আপনার? মেয়েটা বলল, হাবিবা।আমি বললাম,বাবার এত বয়স।তবুও তার মতো মানুষকে কেন বিয়ে করলেন? সে বলল, বাপ নাই আমার। মা আবার বিয়ে করেছে। সৎ বাবা আমাকে দেখতে পারে না। কুনজর দেয় সবসময়। মায়ের কোনো পথ ছিল না এ ছাড়া। আপনার বাবা বলেছিলেন,অনেক ভালো রাখবে আমাকে।কোনো কষ্ট হবে না এখানে। ওনার একটা মেয়ে আছে বলেছিলেন। বিয়ে হলে সব ঝামেলা শেষ বলেছিলেন। কিন্তু আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে।আপনি আমার উপর রাগ করবেন না।আমি আপনার মায়ের জায়গা নিতে আসিনি।আমার কিছু করার ছিল না। বাপ নাই তো তাই এমন হতভাগা।
আমি এবার হাসলাম।বললাম, আপনার বাবা নাই তাই হতভাগা। আমার বাপ থেকেও আমি হতভাগা। আমার মা নাই যে।ভাই টাও চলে গেল একা করে।বাবা মায়ের কাছে এই বয়সে সন্তান চেয়েছিলেন।মা পারেনি।কিন্তু আপনার কাছে এটাই চায় হয়তো। হাবিবার চোখে পানি। সে চোখ মুছে বলল,আপনার বাবা খুব খারাপ মানুষ। জঘন্য মানুষ সে।স্বামী হওয়ার মতো মানুষ সে না।প্রতি রাতে অত্যাচার করে। শুধু বলে একটা ছেলে দিলে আমাকে রাখবে।না হলে তাড়িয়ে দিবে আমাকে।ছেলে না মেয়ে হবে তা তো আল্লাহর উপর নির্ভর করে। আমার কী ক্ষমতা আছে ছেলে হওয়ানোর?আমি এটা বললেই, ধরে মারে।জীবন এই কয়দিনে বিষের মতো লাগে। আমি বুঝতে পারছি হাবিবা এত ছোট বয়সে কতটা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার। কিন্তু আমিই বা কী করতে পারি?আজ মা থাকলে হাবিবাকে এখানে আসতে হতো না।আমারও এমন কষ্ট হতো না।
প্রায় রাতেই হাবিবা কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে।আমি আমার ঘরে রাতে থাকতে দেই।এটা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে গেছে। সারারাত হাবিবা আর আমি গল্প করি।এখন ওকে আমার খুব ভালো লাগে। আমার সাথে হাবিবার বন্ধুর মতো সম্পর্ক।তবে বাবার সামনে আমরা কেউ কারো সাথে কথা বলি না।হাবিবা আমাকে তার সুখ দুঃখের কথা বলে মন হালকা করে। আমিও তাই করি।একে অন্যকে তুমি করে বলি এখন।
একদিন হাবিবা সকালে বলল, তোমার বাবা আজ কয়েকজনকে আসতে বলেছেন। তোমাকে দেখতে আসবে আজ।তুমি একদম রাজি হবে না।তোমার পড়ালেখা নষ্ট করবে না।আজ আমার বাবা বেঁচে থাকলে আমার পড়ালেখা ঠিকই হতো।তুমি কিছুতেই রাজি হবে না।বেশি চাপ দিলে পুলিশের ভয় দেখাবে।তখন বুঝবে মজা।একদম শক্ত হতে হবে।আমিও বুঝতে পারছি বাবাকে এবার শক্ত ভাবে কথা বলতে হবে।
বিকালে কয়েকজন মিলে আমাকে দেখতে আসলো।বাবা হাবিবাকে ডেকে বললেন, মিতুকে নিয়ে এসো।সেজেগুজে যেন আসে।আমি হাবিবাকে বললাম,তুমি বাবাকে গিয়ে বলো আমি আসবো না।আর তাকে আসতে বলো।হাবিবা ভয় পেলেও বাবাকে গিয়ে বলল।আর বাবা সবার সামনে থেকে হাবিবাকে টেনে এনে বাহিরে এসেই চড় মারলেন।
আমি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম, আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করে এই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?কাকে জিজ্ঞেস করে এই সব মানুষকে ডেকেছেন?আমি এখন বিয়ে করবো না।ওনাদের চলে যেতে বলেন।আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমি মামাকে বলে রেখেছি।আপনার কথা পুলিশকে বলবো। বাবা রাগে ফেটে পড়লেন।চিৎকার করে বললেন এত বড় সাহস তোমার। এটা আমার বাড়ি।এ বাড়ির সব সিদ্ধান্ত আমিই নিব।বেশি বাড়াবাড়ি করলে এ বাড়িতে থাকতে পারবে না।
আমি বাবার দিকে তাকিয়ে বললাম, এটা শুধু আপনার একার বাড়ি না।এটা আমার মায়েরও বাড়ি। এই বাড়ির সবকিছু আমার মা করেছে।বাড়ির অনেক কাজ মা মামার কাছে থেকে টাকা এনে করেছে। আমাকে চাইলেই বের করতে পারবেন না।বাবা গজগজ করতে করতে চলে গেলেন।আমি হাবিবার হাত ধরে বললাম,আমাকে ক্ষমা করে দিও।আমার জন্য তুমি মার খেলে।হাবিবা বলল,এটা কিছু না।তোমার ভালো হোক এটাই চাই আমি।হাবিবাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম।আজ সত্যি সে খুব আপন আমার।
হঠাৎ করে হাবিবা অসুস্থ হয়ে যায়। বাবা ডাক্তার দেখায়।হাবিবা মা হতে চলেছে। বাবা অনেক খুশি।বারবার হাবিবাকে বলেন, ছেলেই হতে হবে।আমার বংশ রক্ষার জন্য ছেলেই হতে হবে। হাবিবা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকে সবসময়। মনে আনন্দ নেই। বাবা বলেছেন, ছেলে না হলে এই সন্তান সহ তাকে বের করে দিবে।আমি যতটা পারি স্বান্তনা দিতে থাকি হাবিবাকে।কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না।হাবিবা আমার হাত ধরে কাঁদে। তার ছেলে না হলে এই সন্তান নিয়ে কোথায় যাবে সে?আমি হাবিবাকে বহুবার বলেছি,তুমি কোথাও যাবে না।ছেলে মেয়ে যেটাই হোক।সে বাবার সন্তান। তার অধিকার আছে এখানে থাকার।কিন্তু হাবিবা এতোদিনে বাবাকে চিনে গেছে।
ছয় মাস হলে বাবা হাবিবাকে নিয়ে আলট্রাসাউন্ড করায়।ডাক্তার বলেছে, মেয়ে হবে।এটা শুনে বাবা সাংঘাতিক রেগে যান।বাড়িতে এনে হাবিবাকে বাজে ভাষায় গালি দিতে থাকেন।হাবিবাকে চলে যেতে বলেন বাড়ি থেকে। আমি সামনে গিয়ে বলি,সে কোথাও যাবে না।আর গেলে সে চাইলেই আপনার নামে কেস করতে পারে। আপনি জেলে যাবেন।আর হাবিবার এই সন্তান আপনার।হাবিবা চাইলে এই সন্তান আপনার কাছে দিয়ে চলে যেতে পারে। তখন একা পালবেন এই বাচ্চা। বাবার রাগ আরও বেড়ে যায়।
আমাকে হাত ধরে বের করে দিয়ে হাবিবাকে মারতে থাকেন। আমি বাহির থেকে চিৎকার করে বাবাকে থামতে বলি। কিন্তু সে থামে না।মারামারি এক পর্যায়ে হাবিবা বাবাকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে চায়।কিন্তু বাবা গিয়ে দেওয়ালে ধাক্কা খেল। মাথা দিয়ে রক্ত পড়তে লাগল।বাবার কোনো হুশ নাই। হাবিবা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। আমি ভিতরে গিয়ে বাবার কাছে গিয়ে দেখি।বাবা আর নেই। যা বোঝার বুঝতে পারছি। বাবা তো চলে গেছেন। হাবিবাকে এসে বললাম,এটা কী করলে?
সে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। বলল,এই হিংস্র মানুষটাই আপনার মা’কে মেরে ফেলেছে। আজ আমাকেও মেরে আপনার মায়ের কাছে পাঠাতে চেয়েছিলেন। আমি একা না এখন।আমার সন্তান আছে আমার সাথে। আমি তাকে জন্ম দিতো চাই। আমিও এবার পাথরের মতো হয়ে গেলাম।এই মানুষটা আমার বাবা হয়েও আমার মা’কে খুন করেছে। তার মৃত্যু হয়েছে এতে আমার কোনো কষ্ট হচ্ছে না।আমি হাবিবাকে বললাম, আমি চাচাদের জানাচ্ছি।কেউ জানতে চাইলে বলবে,হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায় বাবা।পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। আমরা এসে দেখি বাবা পড়ে আছে। হাবিবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি সবাইকে আসতে বললাম।সবাই এটাকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই মনে করলো। বাবা চলে গেছে। কিন্তু কোনো কষ্ট হয় না তার জন্য। একটা খুনির জন্য কষ্ট হয় না আমার। হাবিবা নিরুপায় ছিল। বাবাকে তো সে মারতে চায়নি।
হাবিবার সুন্দর একটা মেয়ে হয়েছে। আমি নাম রেখেছি নিতু।আমরা তিনজন এখন এই বাড়িতে থাকি।আমার পড়ালেখার জন্য হাবিবা সবসময়ই পাশে থাকে।ঠিক যেভাবে আমার মা আর ভাই থাকতো। বাজারে আমাদের দোকান ভাড়া থেকে যে টাকা আসে।তা দিয়ে খুব ভালো করে চলে যায়। হাবিবা চায় আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হই।আর নিতুর সব দায়িত্ব আমার।ওকে আমি যেন মানুষ করি।আমাদের তিনজনের অনেক সুন্দর গোছানো জীবন এখন।হাবিবা কখনো আমার মা হতে চায়নি।আমার বন্ধু হয়ে থেকেছে। আজও তাই আছে সে।নিতু ধীরে ধীরে আমাদের আদরে বড় হচ্ছে। নিতু সর্বপ্রথম মা না ডেকে, ডেকেছে বুবু।আমার চোখে সেদিন আনন্দের অশ্রু।আমরা আজ মুক্ত। আমাদের মুক্তির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
Mutations found were mainly two of the three primary mitochondrial DNA mutations 11778G A, 3460G A duree effet levitra How do you keep out the burgeoning viruses and Trojan horses, prowling in the cyberspace
8zziyd
baclofen otc australia
hydroxychloroquine 70 mg
over the counter amoxicillin without prescription
robaxin iv
gabapentin mexico
mebendazole tablets
us pharmacy no prescription
albuterol 83
Aw, this was an exceptionally nice post.
Spending some time and actual effort to make a good article… but what can I say… I
hesitate a lot and don’t seem to get anything done.
effexor 75mg
Greetings! Very helpful advice within this article!
It is the little changes that produce the biggest changes.
Thanks for sharing!
propanolol 20 mg to buy without prescription
finasteride 1mg uk
accutane prescription cost
A powerful share, I simply given this onto a colleague who was doing slightly analysis on this. And he the truth is bought me breakfast as a result of I discovered it for him.. smile. So let me reword that: Thnx for the treat! But yeah Thnkx for spending the time to debate this, I feel strongly about it and love studying more on this topic. If potential, as you become experience, would you mind updating your blog with extra details? It’s highly helpful for me. Massive thumb up for this blog publish!
tadalafil generic best price
buying zithromax online
cialis pharmacy cost
generic tadalafil for sale
how to get valtrex without a prescription
brand cialis 5 mg
online pharmacy without insurance
prednisone 80 mg daily
buy tadalafil
prednisone without precription
tadalafil 6mg capsule
lisinopril 25mg tablets
buy cheap lisinopril
azithromycin 200mg price
azithromycin gel brand name
synthroid 0.15
valtrex 100 mg
prices pharmacy
prednisone 2.5
synthroid tablets
australia online pharmacy free shipping
azithromycin 750 mg
buy synthroid uk
mexican pharmacy weight loss
azithromycin for sale online
zestril tablet
synthroid 0.125 mg
valtrex 100 mg
generic tadalafil from india
safe online pharmacy
metformin 2000 mg daily
cialis buy europe
lisinopril 12.5 mg 20 mg
legit online pharmacy
where can you purchase valtrex
can you buy zithromax over the counter in mexico
zestoretic online
where to buy valtrex 1g
112 mcg synthroid price
cost of prinivil
generic zithromax over the counter
generic synthroid online
buy lisinopril 5mg
lisinopril brand name canada
buy azithromycin nz
prices of metformin
azithromycin 250 mg tablet over the counter
happy family rx
prednisone 1 mg tab
where can i buy valtrex online
cheap azithromycin
indian pharmacy paypal
valtrex generic
where can you buy valtrex over the counter
legitimate online pharmacy
happy family store canadian pharmacy
glucophage 750 mg
canadian pharmacy prices
250 mg metformin
synthroid 88 mcg cost
tadalafil from india
online pharmacy usa
tadalafil soft gel capsule 20mg
indian pharmacy paypal
where to buy generic tadalafil
lisinopril online usa
online pharmacy australia paypal
online canadian pharmacy coupon
Have you ever thought about writing an ebook or guest authoring on other sites? I have a blog centered on the same information you discuss and would really like to have you share some stories/information. I know my readers would enjoy your work. If you are even remotely interested, feel free to shoot me an e-mail.
where can i buy metformin over the counter uk
valtrex 500mg price canada
generic prinivil
вакансии в москве психолог w-495.ru
tadalafil best price uk
tadalafil best price
tadalafil tablets price in india
metformin 50 mg
prednisone 20 mg pill
zithromax 500
400 mg prednisone
synthroid 400 mg
canadian pharmacy tadalafil 20mg
tadalafil otc india
synthroid pills for sale
20 mg prednisone tablet
canadianpharmacy com
generic valtrex
synthroid costs us
canadian pharmacies compare
0.025 mg synthroid
metformin 750 mg
viagra online canadian pharmacy
lisinopril 12.5 20 g
lisinopril 60 mg daily
trustworthy canadian pharmacy
buy zithromax
zithromax coupon
order generic tadalafil
valtrex usa
buy cialis online pharmacy
azithromycin discount drug coupon
lisinopril 40 mg for sale
azithromycin canada price
order valtrex online
online pharmacy prescription
metformin 500mg tablets cost
synthroid 125 mg
lisinopril 10 12.55mg
valtrex cream over the counter
azithromycin capsules 500mg
lisinopril 30 mg daily
synthroid 137mg without prescription