ছোট গল্প-ঃ ভাই বোনের কেমিস্ট্রি

IMG 20210819 144758
Read Time:5 Minute, 5 Second

নিলয় ঘরে ঢুকে দেখে বড় বোন নিতু কাঁদছে। নিতুকে কাঁদতে দেখে নিলয় বুঝতে পারে কী হয়েছে। তবুও জিজ্ঞেস তো করতে হবে তাই না? একমাত্র বড় বোনটা কাঁদছে। ভাই হিসাবে তার একটা দায়িত্ব আছে না? এজন্য নিলয় জিজ্ঞেস করলো

কীরে আপু কাঁদছিস কেন? নয়ন ভাই কি কিছু বলেছে? তোকে আগেই বলেছিলাম নয়ন ভাই প্রেম করার জন্য ভালো ছেলে না। ওর কত যে গার্লফ্রেন্ড আছে! আমার কথা তো শুনলি না। আমাকে তো শত্রু মনে করিস তুই। তারপর বল কী হলো? আমি তোর একমাত্র ভাই। তোর কষ্টে আমার কি ভালো লাগে বল? আমি নয়ন ভাইকে দেখে নিব। আরে বল কিছু। একাই কথা বলে যাচ্ছি।

নিতু চোখ মুছে বলল নয়ন কিছু বলে নাই।
নিলয় অবাক হয়ে বলে তাহলে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছিস কেন?
নিতু বলল তোর মনে আছে আমাদের বিল্ডিংয়ের দুই তলায় লিঙ্কন ভাইরা ছিল?
হুম। তো কী হয়েছে তাতে? সে কোথায় থেকে উদয় হলো আবার?
আরে কয়দিন আগে বুয়েটের ক্যাম্পাসে তাকে দেখেছি। আমি তো তাকে দেখে চিনতেই পারি নাই। সে আমাকে ডাক দিল। যখন নাম বলল লিঙ্কন।তখন মনে পড়েছে। এত সুন্দর আর স্মার্ট হয়েছে আগের চেয়ে। আমি দেখে তাকিয়েই ছিলাম। চোখ সরাতেই পারছিলাম না। বুয়েটে পড়ছে জানতাম না। আমার মোবাইল নম্বর নিল।তারপর তার নম্বরটাও দিল আমাকে। আমি বাসায় আসছি এমন সময় আবারও দেখা। বলল
চলো তোমাকে নামিয়ে দেই।আমার বাসায় ঐ দিকে দিয়েই যাবো।

এত সুন্দর বাইক।আমি উঠে বসলাম।মনে হচ্ছিল আমি ইন্ডিয়ান নায়িকা। তাকে নায়কের চেয়ে কম লাগেনি। আজ আমাকে মেসেজ দিয়েছে। আমাকে প্রপোজ করেছে লিঙ্কন ভাই। এখন কী করবো? নয়নকে কী করে ছাড়বো বল?

নিলয় মাথায় হাত দিয়ে বলে এখন তো আমার মাইর খাওয়ার পালা তোর জন্য। এসব ঝামেলার জন্য কত সাবধানে প্রেম করি জানিস? একটা না ছেড়ে আর একটা ধরি না।এখন কী হবে রে?আচ্ছা ঠিক আছে যদি আমি তোকে সাহায্য করি নয়ন ভাইকে ছাড়তে তো আমাকে কী দিবি?

নিতু নিলয়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলে আমার সোনা ভাই যা চাস দিব। কি করা যায় দেখ না।এমন কাজ করবি যেন সাপও মরে আর লাঠিও না ভাঙে।

নিলয় বলে আচ্ছা মনে থাকে যেন।সময় হলে বলবো কী চাই। আমার একটা বুদ্ধি আছে। আমি জানি ইদানীং কার সাথে নয়ন ভাই ইটিস পিটিস করে। আমি তোকে কল করলেই চলে আসবি সেখানে। আর কপাল পোড়া হতভাগী মেয়ের মতো কান্না শুরু করবি। এমন ভাব দেখাবি যে সে তোকে ধোঁকা দিয়েছে। তোর বিশ্বাস ভেঙেছে। তোর মন ভেঙেছে। আমি জানি তুই ভালোই পারবি।আমার পুরুষ্কারের কথা ভুলিস না কিন্তু।

যেই কথা সেই কাজ।সুযোগ বুঝে নিলয় একদিন নয়নের সাথে একই মহল্লার মেয়ে রূপা আপুর সাথে পার্কে দেখে। সাথে সাথেই নিতুকে কল করে জানায়।নিতু এসে তাই করলো যা ঠিক করা ছিল। নয়ন বেচারা গোবেচারার মতো দাঁড়িয়ে থাকলো।নিতু আর নিলয়ের কাজ সম্পন্ন হলো।

এরপর নিলয় অবশ্য পুরুষ্কার হিসাবে একবার না বহুবার নিতু আর লিঙ্কনের সাথে বাইকে ঘুরেছে। অনেক বার বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে মুভি দেখেছে। নিলয়ের খুব পছন্দ হয়েছে লিঙ্কনকে।খুব ভালো ছেলে।শেষ পর্যন্ত কিন্তু নিতু আর লিঙ্কনের বিয়ে হয় পাঁচ বছর পর। এত বছর তারা তিনজন খুব মজা করে। ছোট হলেও ভাই কখনো বোনের জন্য কম করে না। জান দিতেও রাজি থাকে। যদিও তাদের মাঝে ঝগড়া মারামারি কম হয় না। ভাই বোনের মধ্যে এমন ভালোবাসার কমতি নেই এখনো। ভাই বোনের জীবনে এমন দুষ্টু মিষ্টি কাহিনীর কমতি থাকে না জীবনে। সম্পর্কগুলো যেন এমনি অটুট থাকে সারাজীবন। সময়ের গহবরের তলিয়ে যায় নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

210 thoughts on “ছোট গল্প-ঃ ভাই বোনের কেমিস্ট্রি

  1. The usual dose of bicarbonate is 5 15 mE kg day buy cialis 5mg online Let s go and see, After that, he stepped into the barracks first, There were many mercenaries sitting in the courtyard of the barracks, persistent cough caused by blood pressure medication At this time, they had already eaten dinner, and it was time to get together and talk nonsense

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social profiles