গল্প -ঃ প্রতীক্ষিত ভালোবাসা।

IMG 20210805 223040
Read Time:18 Minute, 45 Second

আমরা তিন বন্ধু আমি অনাদি, প্রমা আর সাগর। আমরা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে এক সাথে অর্থনীতিতে পড়েছি।আমাদের বন্ধুত্ব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল। এখনো আছে বলবো। আমি প্রথমে তেমন কিছু বুঝতে পারিনি। আমার মধ্যেও যে ভালোবাসার বীজ রোপন হয়েছে অজান্তেই। কবে যে সাগরকে ভালোবাসতে শুরু করেছি বুঝতে পারিনি। শুধু মনে হতো ওকে না দেখলে খুব খারাপ লাগে। সেটা তো প্রমাকে না দেখলেও লাগে। নিজেকে এটা সেটা বুঝাতে চাইতাম। কিন্তু মন কেন যেন মানতে চাইত না।

ভার্সিটিতে কতো ছেলে প্রপোজ করত।আমার খুব রাগ হত। তাদের কাউকেই ভালো লাগত না। এটা নিয়ে প্রমা আর সাগর খুব রাগাত আমাকে। মাঝে মাঝে সাগর মজা করে বলত,
—দেখিস শেষ মেশ আমার ঘাড়ে চেপে বসিস না।
আমি ওকে কিল দিয়ে বলতাম, আমার মাথা এত নষ্ট হয়নি।

কিন্তু দিন যতই যেতে লাগল ততই কেমন যেন সাগরকে ভালো লাগতে শুরু করল। অনার্স পরীক্ষার পর থেকে প্রমাকে সাগরের সাথে দেখলে খুব কষ্ট লাগত আমার। শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারলাম। সত্যি আমি সাগরকে ভালোবেসে ফেলেছি। মনে মনে ঠিক করলাম ওকে আমিই বলব। ওর মতো গাধা তো আমাকে কিছু বলবে না। অনেক সময় মনে হয় সাগরও আমাকে পছন্দ করে। ওর মনের সব কথা তো আমাকেই বলে।ও সবসময়ই বলে, আমি নাকি প্রমার চেয়ে ভালো বুঝতে পারি।

মাঝে মাঝে আমাকে উদাস দেখে মা বলত, কিরে প্রেমে টেমে পড়েছিস নাকি? তোর এই বয়সে তো সবাই বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে। আমার কাছে কিছু লুকাবি না। মা’কেও কিছু বলতে পারতাম না। কারণ আমি জানতাম না সাগর আমাকে ভালোবাসে কিনা।
ঠিক করলাম সামনে ওর জন্মদিন। সেই দিনই ওকে সব খুলে বলব। এর মধ্যে আমাদের মাস্টার্সের ক্লাস শুরু হল। মাঝে মাঝে প্রমাকে সাগরের সাথে বেশি ঘনিষ্ঠ মনে হত।ভাবতাম এত দিনের বন্ধুত্ব তাই এতটা ঘনিষ্ঠ তো হতেই পারে।

সাগরের জন্মদিনে আমি আর প্রমা মিলে সারপ্রাইজ প্লান করলাম। বিকালে সাগরকে কল করে বললাম, ধানমন্ডি কলা বাগানের জিনজিয়ানে আয়। আমি আর প্রমা আগ থেকেই কেক নিয়ে ওখানেই ছিলাম। সাগর এসে আমাদেরকে কেক নিয়ে বসে থাকতে দেখে খুব সারপ্রাইজ হয়। ও মনে করেছিল আমরা ভুলে গেছি। যাই কেক কাটা হল।

এরপর আমার কলিজাটা কেউ কেটে টুকরো টুকরো করে দিল মনে হয়। সাগর আমার হাত ধরে বলল, দোস্ত তোকে জানানো হয়নি। আমি প্রমাকে ভালোবাসি।আর প্রমাও আমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। অনার্স পরীক্ষার পর যখন প্রমা দূরে যায়।মনে হল ওকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। সব খালি খালি লাগত। শেষ অবধি ওকে ডেকে এনে প্রপোজ করি। আমি জানতাম না প্রমাও আমাকে মনে মনে এত ভালোবাসে। তোকে বলা হয়নি। সবাই বন্ধু ছিলাম এখন একটা সম্পর্কে জড়িয়ে কেমন যেন লজ্জা লাগছিল। আমি একটা ভালো জব পেলে প্রমার বাবার কাছে যাবো। আমাদের বিয়ে নিয়ে কথা বলতে। সাগর এক নিঃশ্বাসে সব বলে গেল। আমি মনে হয় কথাগুলো কোনো রকমে শুনে গেলাম।চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করবে যে কোনো সময়। আমি হেসে বললাম, আরে খুব খুশির কথা। এতদিন কেন বলিস নাই? প্রমাকে জড়িয়ে ধরে কংগ্রাচুলেশনস বললাম।মনে হল নিজের কাছেই অদ্ভুত লাগছে আমার রোবটের মতো বলা কথাগুলো। ওখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না।তাই বললাম, তোরা ঘোরাঘুরি কর।আমি বাসায় যাবো। সাগর রাগ দেখিয়ে বলল, মানে কী? আমার জন্মদিনে এক সাথে ঘুরবো। রাতে আমি খাওয়াবো।তুই কোথাও যাবি না।বন্ধুর জন্য এতটুকু করবি না?

আমি বললাম, পারলে থাকতাম। আব্বু ঢাকার বাহিরে গেছে। মা’কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে আমার। ডায়বেটিস বেড়ে গেছে মনে হয়। আর তুই এখন বন্ধু কম,বান্ধবীর হবু জামাই বেশি। বুঝতে পারলি? প্রমা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, একদম না।আমরা আগে যেমন ছিলাম ঠিক তেমনি থাকবো সারাজীবন। আমি হেসে বললাম, তাই যেন হয়।

আমি চলে গেলাম ওখান থেকে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছিলাম না।সব এলোমেলো হয়ে যেতে লাগলো। সাগরের জন্য আনা গিফটাও গাড়িতেই থেকে গেল।মনেই ছিল না ওকে দিতে। ভেবে রেখেছিলাম, ওকে একা গিফট আর কার্ড দিব। যেখানে আমার মনের কিছু কথা লেখা আছে। গাড়িতে উঠে বসতেই হাতে লাগল কার্ডটা।ছিঁড়ে ফেলে দিলাম। নিজেকে খুব বোকা মনে হতে লাগল।কেন আমি ওদের সম্পর্কটা বুঝতে পারিনি? এত গাধা কেন আমি?

বাসায় এসে মা’কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম। মা আমার এমন কান্না দেখে অস্থির হয়ে গেল।কী হয়েছে আমার জানতে চাচ্ছে বারবার। আমি মা’কে সব খুলে বললাম।

মা আমার কথা শুনে বলল,ছেলেটার চয়েস ভালো না।না হলে তোর মতো মেয়েকে রেখে প্রমার মতো পাটকাঠিকে পছন্দ করে। মা আসলে প্রথম থেকেই প্রমাকে এই নামে ডাকে দুষ্টুমি করে। মা আসলে আমার কান্না থামাতে চাচ্ছিল। আমি বুঝতে পারছি। তবুও খুব রাগ হল।বললাম, তোমার কী আমার কষ্টে কষ্ট হচ্ছে না মা?

মা আমার মাথায়,হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, আমার একমাত্র মেয়ে তুই। তুই বললে তোর বাবা তোর জন্য সবকিছুই করতে পারে। সাগরের বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে পারে। কিন্তু তুই কী তা চাস? আমি মা’কে বললাম, তুমি কী সব বলছো মা! আমি এমন মেয়ে না।এটা আমার একতরফা ভালোবাসা ছিল। সাগর তো কোনদিনই আমাকো ভালোবাসেনি। আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখো মা।খুব কষ্ট হচ্ছে মা।
এরপর অনেক দিন আমি নিজের কষ্ট লুকাতে পরবো না বলে সাগর আর প্রমার সাথে যোগাযোগ করি নাই। শুধু মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে ঢাকার বাহিরে চট্টগ্রামে খালার বাসায় চলে যাই। হঠাৎ বাবা অসুস্থ হওয়ার জন্য ঢাকায় ফিরতে হয়।আমি ছাড়া এ সময় বাবার কাজে সাহায্য করার কেউ নেই। এর মাঝে হাঠাৎ হঠাৎ কথা হয়েছে প্রমার সাথে। তবুও সেটা প্রমা কল দিলে। আমি কিছুতেই সাগরকে ভুলতে পারছিলাম না। সাগর প্রায়ই কল দেয়। না ধরলে মেসেজ দিয়ে রাখে।আমি শুধু দেখে ডিলেইড করে দেই। ওর নম্বরটা মোবাইলে ভেসে উঠলেই কান্না আসে।কারণ ওর নম্বরের সাথে ছবিটাও মোবাইলের স্কিনে ভেসে উঠে।

সবকিছু ভুলে থাকার জন্য বাবার অফিসে কাজ করা শুরু করলাম। একদিন আমাকেই হাল ধরতে হবে তাই বাবা সব কাজ বুঝিয়ে দিতে লাগলেন। আমর বিয়ের জন্য খুব চাপ দিতে থাকলো বাসা থেকে।

আমি মা’কে বলে দিলাম, কিছু দিন সমায় দেও আমাকে। কাজগুলো বুঝে নেই আগে। এখন বিয়ে করার কোনো ইচ্ছা নেই আমার। মা হয়তো বুঝতে পারলো। মা’কে দায়িত্ব দিলাম বাবাকে বোঝাতে।

হঠাৎ সাগর মা’কে কল দিয়ে বাসায় এসে হাজির। আমি তো অবাক হয়ে গেলাম। এভাবে তো ওর আসার কথা না। আমার হাত ধরে কেঁদে ফেলল।এত বছর ওকে এভাবে কোনদিনই দেখি নাই। আমি ওকে শান্ত হতে বললাম। জিজ্ঞেস করালম,কী হয়েছে তোর? এমন করছিস কেন? কোন সমস্যা হয়েছে তোর? এভাবে ভেঙে পড়িস না। আমি আছি যা পারি করবো তোর জন্য।

সাগর এবার আমার হাত জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল। আমি সত্যি হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমি ওকে শান্ত হতে বললাম। সাগর যা বলল, আজও তার জন্য আমি প্রস্তুত ছিালম না। ও বলল, প্রমা আমাকে ছেড়ে চলে গেল।আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না অনাদি। ও এমন করতে পারে না। আমি যে ওকে সত্যি অনেক ভালোবাসি। ওকে ভালোবাসি বলতে আমার দুই বছর লেগেছে। আজ সবকিছু শেষ করে চলে গেল। চারদিন পর ওর বিয়ে। একটা মাস ওকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু যে থাকবে না।তাকে কী করে আটাকই বল?

আমি জিজ্ঞেস করালম, প্রমা তো এমন মেয়ে না। ও এমন কেন করলো? তুই আগে কেন বলিস নাই আমাকে?
সাগর বলল, কতদিন তোকে কল করেছি।তুই হঠাৎ এত পর হয়ে গেলি! এত দূরে সরিয়ে দিলি আমাকে। তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তুই আমাকে ছেড়ে গেলি।আজ আমার ভালোবাসাও চলে গেল। তোরা বড্ড স্বার্থপর মানুষ।
আমি কি করে বলি, কেন সরে গেছি।

সাগর বলল, আমাকে প্রমা ওর বাবার সাথে দেখা করাতে নিয়ে যায়। ওর বাবা আমাদের পরিবার সম্পর্কে সব জানার পর সেদিন কিছুই বলেনি। আমাদের আর্থিক অবস্থা প্রমাদের মতো এত ভালো না। পরে প্রমাকে নিষেধ করে দেয় আমার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখতে।প্রথমে প্রমা মানতে রাজি হয়নি ওনার কথা। পরে হঠাৎ ওর বাবা কী বলে যেব ওকে রাজি করায়। এখন আর প্রমা আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে চায় না। আজ সবকিছু শেষ করে চলে গেল। কোনকিছু বলেই ওকে ধরে রাখতে পারলাম না।

আমি ওকে বললাম, এত সহজে কেন যেতে দিলি ওকে? যাকে এত ভালোবাসিস তাকে এত তাড়াতাড়ি কেন ছেড়ে দিলি?

সাগর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, যে আমার হয়ে থাকতে চায় না তাকে কী করে ধরে রাখি বল? আমাকে আর ভালো না বাসলেও প্রমা যেন আমাকে ঘৃণা না করে। তাই আর জোর করে ধরে রাখতে চাই না। ভালোবাসা না থাকুক।কোনদিন যেন আমাকে মনে করে আত্মতৃপ্তি পায়। যে আমি ওকে সত্যি ভালোবাসতাম। আমি আর পারছি না। এভাবে ভালোবাসার মানুষটাকে চোখের সামনে পরের হতে দেখতে পারবো না দোস্ত। আমার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।তুই ছাড়া আর কাউকে খুঁজে পাচ্ছিলম না মনের কথা গুলো বলার জন্য। দমবন্ধ হয়ে আসছিল আমার।
আমি সাগরের দিকে তাকিয়ে বললাম, যেদিন তুমি বললি, তুমি প্রমাকে ভালোবাসিস।সেদিন আমারও ঠিক এমনই মনে হয়েছিল। বাসায় এসে মা’কে জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছি। এরপর থেকে তোদের কাছে থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছি। আজও তোর কথা মনে হলে নিজেকে বোকা মনে হয়। গোপনে ভালোবেসে গেছি তোকে।বলার সাহস হয়নি।আর যেদিন হল, সেদিন তুই অন্য কারো।

আমি আজ কীভাবে নিজের মনের কথা সাগরকে বলে দিলাম জানি ন। সাগরের দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমার হঠাৎ নিজের উপর রাগ আর লজ্জা দুটোই হলো। আমি সাগরের সামনে থেকে চলে যেতে লাগলাম।

পিছন থেকে সাগর আমার হাত ধরে বলল, আমি সত্যি জানতাম না। তুই আমাকে ভালোবাসতি! আমাকে ছেড়ে যাস না। ভালোবাসা হারিয়ে গেছে। বন্ধু হারাতে চাই না প্লিজ। আমাকে ধরে রাখ। আজ একা হলে আমি সত্যিই কোথাও হারিয়ে যাবো।কোনদিনই খুঁজে পাবি ন। আমাকে ছেড়ে যাবি না বল? বন্ধু হয়ে আমার পাশে থাক প্লিজ। আমি তোমাকে আজ প্রেমিকের মতো ভালো না বাসলেও বন্ধুর মতো ভালোবাসি।তুই তো আমাকে আজও ভালোবাসিস। আমি তোকেও হারাতে চাই না। এই এক মাস আমি তিলে তিলে মরেছি।আর পারছি না।

আমি কেন যেন সাগরকে সেদিন ফিরিয়ে দিতে পারিনি। ওকে জড়িয়ে ধরে আমিও কেঁদেছিলাম। প্রমার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর সাথে অল্প দিনের মধ্যে লন্ডন চলে যায়। আমি আর সাগর আবারও আগের মতো বন্ধু হয়ে যাই। প্রমার জন্য সাগর ঠিক মতো অফিসে যেত না। তাই ওর চাকরিটা চলে যায়। আমি বাবাকে বলে সাগরকে আমাদের কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করি। এভাবে চলতে থাকে একটা বছর।

হঠাৎ একদিন সাগর আমাকে বলল, তোকে একটা কথা বলবো।আমি ওর দিকে তাকালাম।আজ ওর চোখে অন্য আমি। আমি বললাম,হুম।বল,শুনছি আমি। সাগর বলল, মা বাবাকে তোদের বাসায় পাঠাবো। তোকে আমার বউ করে আনতে। তুই কী আজও আমাকে ভালোবাসিস?
আমি আজ ওর কথায় খুব লজ্জা পেলাম। কী বলবো বুঝতে পারছি না। তবুও বললাম, শুধু কী মা বাবা আসবে? তুই আসবি না?
সাগর আমার হাত শক্ত করে ধরে বলল, আমি না আসলে তোকে কার হতে তুলে দিবে?

বাবা প্রথমে রাজি না হলেও মা তাকে রাজি করায়। কারণ আমি মা’কে বলেছি, তুমি ভালো করেই জানো আমি সাগর ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না মা।

ধুমধামে আমাদের বিয়েটা হয়। আমি সাগরকে পেয়ে যেন সমস্ত দুনিয়া পেয়ে গেছি। আমার জীবনে আর কিছুই চাওয়ার নেই। আজ কখনোই মনে হয় না সাগর আমাকে কম ভালোবাসে। আজ ও আমারা ভালো বন্ধু। আমাদের সাজানো সংসার আজ। মাঝে মাঝে সাগর বলে তুমি সত্যি আমাকে মন থেকে চেয়েছিলি। তাই আল্লাহ আমাকে তোর করে দিয়েছে। আমাদের বিয়ের দুই বছর পর একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়। ওর জন্মদিনে সবাইকে আসতে বলা হয়। প্রমা দেশে এসে আমাকে কল করে। দেখা করতে চায়। জেনে গেছে আমার আর সাগরের বিয়ের কথা। আমি আমাদের মেয়ে তনুর জন্মদিনে প্রমাকেও আসতে বললাম। অন্য সব বন্ধুরাও তো আসবে। সাগর অবশ্য নিষেধ করেছিল। কিন্তু আমি সত্যি ওকে মিস করি। অনেক ভালো বন্ধু ছিলাম আমরা।

প্রমা আসে তনুর জন্মদিনে। খুব ভালো লাগে আমার। বারান্দায় প্রমার সাথে সাগরকে দেখি। ওদের পাশ কেটে যাওয়া সময় শুনতে পেলাম।প্রমা সাগরকে জিজ্ঞেস করল, আমকে কী মনে পড়ে? সাগর স্বাভাবিক ভাবে বলে, অনাদি মাঝে মাঝে আমাদের ভার্সিটির গল্প করে। তখন তিনজনের সেই বন্ধুত্বের কথা মনে হয়। প্রমা অভিমানের সুরে বলে, শুধু আমাকে মনে পড়ে না তোমার? সাগর এবার প্রমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, তোকে মনে হয় বললাম তো। আর অনাদির মতো বউ যার আছে সে অন্য কাউকে মনে করার সময় পায় মনে করিস?

প্রমা এবার হতাশ হলো মনে হয়। তাই বলল, অনেক ভালোবাসে তোকে তাই না?
সাগর হেসে বলে, ও আমাকে যতটুকু ভালোবাসে তারচেয়ে হাজার গুণ বেশি ভালোবাসি আমি ওকে।বিশ্বাস না হয় জিজ্ঞেস করতে পারিস।
সাগর পিছন থেকে আমাকে ডেকে বলে, এদিকে আসো।তোমার সবচেয়ে বড় মেহমানকে দেখো। এত দেখতে চাও বন্ধুকে।এত নাকি মিস করো! আমি মেহনাদের দেখছি। তুমি কথা বলো ওর সাথে। আমি হেসে বললাম, ঠিক আছে যাও।

আজ প্রমাকে সাগর বন্ধুর মতো তুই করে বলল। কথাটা খেলায় করেছি আমি। সেদিন সত্যি সাগরকে আরও বেশি ভালো করে চিনতে পেরেছি আমি। সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি সাগর। যতটা ভালো বাসলে তোমাকে একান্ত নিজের করে পাওয়া যাবে ঠিক ততটা। তুমি শুধুই আমার। তুমি আমার প্রতীক্ষিত ভালোবাসা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social profiles