আমার সাথে মা থাকে।বড় দুই বোন দেশের বাহিরে থাকে। মা’কে আমাদের কাছে রেখেছি।বাবার মৃত্যুর পরও মা গ্রামের বাড়িতেই ছিল। কিন্তু যখন থেকে মা অসুস্থ থাকা শুরু করলো এনে আমার এখানেই রাখি। আমার এক ছেলে এক মেয়ে।আমার বউ রিমি
যতটা পারে মায়ের জন্য করে।সমস্যা হয় যখন আমরা বাহিরে কোথাও ঘুরতে যাই।তখন সব জায়গায় তো মা’কে নিয়ে যাওয়া যায় না।
মা বাহিরের পরিবেশ বুঝতে পারে না।কোথায় কীভাবে খেতে হয় জানে না। চামুচ দিয়ে তো একেবারেই খেতে পারে না।তরল কিছু খেতে দিলে কাপড়ে ফেলে দেয়,টেবিলে ফেলে দেয়। যা-তা অবস্থা করে দেয়। মা সুস্থ থাকলেই বাহিরে যাওয়া হয়।তখন মা বাসায় একা থাকতে পারে। তাছাড়া বাসায় ক্যামেরা লাগানো আছে। কেন সমস্যা হলে তো সাথে সাথে দেখতে পারি।পাশের বিল্ডিংয়ে আমার চাচাতো ভাই আছে। ওর কাছে চাবি দিয়ে যাই।কোন সমস্যা হলে যেন তাড়াতাড়ি আসতে পারে।
ছেলে মেয়ে বড় হয়েছে। এখন তাদের জন্মদিন বাসায় করতে চায় না। আর বাহিরে মাকে নিয়ে যাওয়া সমস্যা। তবুও নিয়ে যাই।এমন দিনে মাকে বাসায় রেখে যেতে খারাপ লাগে। কিন্তু আজ বসের জন্মদিন উপলক্ষে নামকরা রেস্টুরেন্টে অফিসের সবাইকে দাওয়াত করছে পরিবার সহ।সবাই আমন্ত্রিত এখানে।পরিবারের৷ বড় ছোট সবাইকে আনতে বলা হয়েছে।
বিশাল আয়োজন করেছে বসের ছেলে মেয়েরা।বসের বসয় তো কম না ৬০ বছর। টাকা আছে তাই এমন আয়োজন করতে পারে। আরও অনেক দানও করে এই দিনে অফিস থেকে।মসজিদ মাদ্রাসায় খাবার দেওয়া হয়। আজ এত বড় বড় মানুষের সামনে মা’কে নিয়ে কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না।কী করতে কী করবে?তাই বাসায় রেখে এলাম।আমরা চারজন এলাম অনুষ্ঠানে। জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করেছে।
ভিতরে যেয়ে যা দেখলাম তা দেখে আমার মাথায় কিছু ঢুলক না। অর্ধেক মানুষই বৃদ্ধ বয়সের।কিছু মানুষ বাদে সবাই তাদের সাথে থাকা বাবা মাকে নিয়ে এসেছে। আমি এই কোম্পানিতে ঢুকেছি আট মাস হলো।আমি জানতাম না বসের সব আয়োজনে তার অফিসের আগে পরের সব কর্মচারীদের দাওয়াত করা হয়।
এমনকি যারা এখন অবসরে গেছে তাদেরকেও আসতে বলা হয়।সবাই তার বাবা মাকে সাথে এনেছে। খুব অবাক হলাম বস তার বৃদ্ধ মা’কে সাথে এনেছে। তার মায়ের পাশেই বসে আছে বস।সবার সাথে মাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। সবাই বসের চেয়ে তার মায়ের সাথে বেশি কথা বলছে সম্মান দিচ্ছে।
আমিও আমার পরিবার নিয়ে বসের সামনে গেলাম তাকে শুভেচ্ছা জানাতে। যদিও গিফট আনতে নিষেধ করেছে। তবুও মা বারবার করে বলে দিল দুইটা ভালো ইসলামি বই নিয়ে যেতে।তাই বসকে দিলাম।সে বই পেয়ে সত্যি খুব খুশি হলো।
বলল, এমনিতেই কারো গিফট নেই না। কিন্তু বই দুটো পছন্দ হয়েছে। পড়তে ভালো লাগে। আমি তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই বলল,থামো মাসুদ। ইনি আমার মা।যে আমাকে আজকের এই দিনে জন্ম দিয়েছে।যে আমাকে হাজারো কষ্ট করে মানুষ করেছে।যার জীবনের সমস্ত সময় আমার জন্য ব্যয় করেছে।আমার জন্য মা সবকিছুই করেছে। কিছু বললে তাকে বলো।আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আাসলো।
আমি বসের মা’কে সালাম দিয়ে বললাম।সত্যি আপনি অনেক বড় সম্মানিত মানুষ। এমন একজন গুণী মানুষ তৈরি করেছেন। উনি আমার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করে বললেন, সব মা’ই তার সন্তানকে এভাবেই মানুষ করে। হয়তো সব সন্তান এমন করে বাবা মা’কে মনে রাখে না। মায়ের দোয়ায় সন্তান বড় হতে থাকে। জীবনে যত উপরেই যাও মা’কে সাথে রাখো। মায়ের দোয়ায় অনেক দূরে যেতে পারবে।তোমার মা, বাবা আছে?
আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। তবুও বললাম, বাবা মারা গেছে আমি যখন অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তখন। এরপর থেকে সব দায়িত্ব মা পালন করেছে।আমার দুই বোন দেশের বাহিরে থাকে।মা আমার সাথে থাকে। মা একটু অসুস্থ তাই চাচাতো ভাইয়ের বাসায় রেখে এসেছি। সত্য কথা বলার সাহস হলো না। একজন এত বড় মানুষ তার মা’কে যে সম্মান দিচ্ছে সেখানে আমি কী করেছি আমার মায়ের সাথে?
বস খুব অবাক হয়ে বলল,তাহলে তোমার আসা উচিত হয়নি।আর আসলেও তাকে সাথে আনা উচিত ছিল। আমি শুধু জি বলে আমার বউ আর বাচ্চাদের রেখে মা’কে নিতে বাসায় আসলাম।বেশি দূরে না।তাই তাড়াতাড়ি এসে মা’কে সুন্দর একটা বোরখা পরিয়ে নিয়ে গেলাম অনুষ্ঠানে। আজ সত্যি নিজেকে ছোট লাগছে।লজ্জা লাগছে সন্তান হিসাবে কতটা দায়িত্বহীন মানুষ আমি।
মা আমার হাত ধরে হাঁটছে ঠিক যেভাবে ছোট বেলায় আমি মায়ের আঁচল ধরে হাঁটতাম। আমি খুব ভীতু আর লাজুক ছিলাম। বোনেরা এজন্য আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। আজ আমি বড়, মা ছোট বাচ্চার মতো হয়ে গেছে।
মা’কে সাথে নিয়ে বসের মায়ের কাছে গিয়ে পরিচয় করিয়ে দিলাম।ইনি আমার মা।যার জন্য আজ আমি এই জায়গায় আসতে পেরেছি। আমার বাবা যে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে গেছে আমার মা তা পূরণ করেছে। আমার মা এমন কিছু নেই যা আমার জন্য করেনি।আমি ছোট তাই সবচেয়ে বেশি আদরের ছিলাম আর আছি।আমার সব সাফল্যের পেছনে আমার মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি।
মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি মা কাঁদছে। আমার কথায় মায়ের চোখে আনন্দের অশ্রু ঝরছে।আমারও চোখে পানি আসলো।মা’কে কখনো এভাবে সামনাসামনি বলা হয়নি।সত্যি মা না থাকলে আমার পড়াশোনা শেষ হত না।আজ আমি এত বড় চাকরি করতে পারতাম না।মা শুধু জন্মই দেয়নি।তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে।বস ও তার মা আমাদেরকে খেতে বসতে বললেন।
আমি মা’কে প্লেটে করে বাসায় যেভাবে খেতে দেই সেভাবেই দিলাম।যাতে মা খেতে পারে। এত মানুষের সামনে মা খেতে একটু সংকোচ করছে। আমি বললাম,কোন সমস্যা নাই। তুমি তোমার মতো করে খাও।পড়ুক যাই হোক কিছু হবে না।আমি আছি তোমাকে কেউ কিছু বলবে না। মা খুশি হলো।তার মতো করে মাখিয়ে খাচ্ছে। তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে আমার মা।
দূর থেকে দেখলাম বস তার মা’কে নিজ হাতে খাওয়াচ্ছিলো। মা আর খাবে না।তবুও বস বলছে আর একটু খাও মা। না খেলে হবে বলো? আস্তে আস্তে করে খাও কোনো তাড়া নেই। আর বসের মা তার ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। হয়তো অনেক অনেক দোয়া করছে।
মায়ের দোয়ার উপর কোন কিছু নেই। এই দোয়া আর ভালোবাসাতেই আমরা বেঁচে থাকি।মায়ের জীবন শেষ হয় শুধু আমাদের জীবন গড়তে।বাবা মা যা করে তার ঋণ কোনদিনই শোধ করা যাবে না। বাবা মা বৃদ্ধ বয়সে ছোট হয়ে যায়। আমরা একটুতেই বিরক্ত হই তাদের উপর। কিন্তু তারা আমাদের সাথে এমন করতো না। বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিলে কোনদিনই ভালো থাকা যায় না।
তাদের দোয়া থাকলেই কেবল ভালো থাকা সম্ভব। এমন একদিন আমাদেরও আসবে। আমাদের হাত ধরে হাঁটার জন্যেও একটা হাত লাগবে।সেটা যেন আমাদের সন্তানের হাত হয়। বৃদ্ধাশ্রমের দরজায় দাঁড়িয়ে একটা লাঠিতে ভর করে কেউ যেন তার সন্তানের অপেক্ষা না করে। কারণ বাবা মা তাদের সমস্ত সম্বল তাদের সন্তানের জন্য শেষ করে। শেষ পর্যন্ত তাদের জীবনের সম্বল বলতে সন্তানেরাই থাকে এই পৃথিবীতে।
%%
Also visit my site … https://forum.armyansk.info/topic19623.html
batmanapollo.ru
Nice post. I learn something more challenging on different blogs everyday. It will always be stimulating to read content from other writers and practice a little something from their store. I’d prefer to use some with the content on my blog whether you don’t mind. Natually I’ll give you a link on your web blog. Thanks for sharing.
Здесь вы найдете разнообразный видео контент ялта интурист двухкомнатный номер
Very good blog! Do you have any hints for aspiring
writers? I’m hoping to start my own website soon but I’m a
little lost on everything. Would you propose starting with a free platform like WordPress or go for
a paid option? There are so many options out there that I’m completely confused ..
Any tips? Bless you!
hi!,I really like your writing so much! percentage we keep up a correspondence extra approximately your post on AOL? I need an expert in this house to solve my problem. Maybe that’s you! Taking a look ahead to see you.
I would like to thnkx for the efforts you have put in writing this site. I am hoping the same high-grade website post from you in the upcoming also. Actually your creative writing abilities has inspired me to get my own website now. Actually the blogging is spreading its wings rapidly. Your write up is a good example of it.