আত্মসম্মান ঃ পঞ্চম পর্ব

image editor output image409314557 1627798434828
Read Time:17 Minute, 16 Second

অনু তার বাবার জন্য শাহীনকে কোনদিনই ক্ষমা করবে না। ভিতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারছে না।দুই দিন পর পরীক্ষা। পড়তেও পারছে না। সত্যি যদি শাহীন কেস করে! যদি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় সমস্যা করে। নানান চিন্তা মাথায় ঘুরছে অনুর। অনুর বাবা অনুকে তার ঘরে ডেকে পাঠায়। অনু জানে বাবা কি বলবে।
বাবা অনুকে কাছে বসিয়ে বলে
— আমি মানুষ চিনতে ভুল করলাম রে মা। তোমার জন্য ভালো চিন্তা করে শাহীনকে ভালো মনে করে পড়ালেখা শেষ না করে বিয়েটা দিলাম। তুমি বিয়ের পর থেকে এত কিছু সহ্য করছো।আমার অনেক আগেই তোমাকে নিয়ে আসা উচিত ছিল। এত ধৈর্য কোথায় পেলে মা? বিয়ের পর কি মেয়েদের সহ্য ক্ষমতা বেড়ে যায়? আমার চঞ্চল মেয়েটা কেমন মন মরা হয়ে গেল।সব আমার দোষ মা।ক্ষমা করে দিও।বাবা হয়ে মেয়ের সত্যিকারের ভালোটা বুঝতে পারলাম না।
অনু বাবাকে থামিয়ে বলে
— তুমি এসব কি বলছো বাবা? তুমি আমার শক্তি। তুমি আমার সবকিছু। আমি তোমার গুণ গুলো শাহীনের মধ্যে চেয়েছি।কিন্তু সে তোমার মতো কোনদিনই হতে পারবে না। একসময় তুমি মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারনি। কিন্তু একসময় তুমি ঠিক মা’কে বুঝতে পেরেছো। আজ আমার জন্য তুমি সবার সাথে লড়ে যাচ্ছো।তোমার কাছে আজ সমাজ সম্মান কোনকিছুই তোমার মেয়ের চেয়ে বড় নয়।কয়জন বাবা তার মেয়ের বিয়ের পর আবারও তার দায়িত্ব নেয় বলো? মেয়েদের বিয়ে দিয়েই দায়িত্ব শেষ ভাবে। তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা।আজ তুমি ঠাঁই না দিলে রাস্তায় পড়ে থাকতে হত বাবা।কারণ ঐ মানুষদের সাথে আমি মরে গেলেও থাকতাম না।

অনুর বাবা অনুর সাহস দেখে মুগ্ধ হয়।তার মেয়েটা কবে এত শক্ত আর বাস্তববাদী হয়েছে? অনুর বাবা বলেন
— আমি বেঁচে আছি এখনো।তুই ঐখানে আর যাবি না। কোনদিনই আমি তোকে ঐ অসম্মানের আর যন্ত্রণার জীবনে ফিরে যেতে দিব না। ছেলে যদি সারাজীবন বাড়িতে রাখতে পারি। তাহলে মেয়েকেও পারবো। দুজনেই আমার ঘরের সন্তান। শাহীন যা করে করুক।আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। তোর পরীক্ষার সময় ঐ শয়তান ঝামেলা করতে পারে।চল আমরা থানায় গিয়ে কথা বলি।শাহীনকে দিয়ে বিশ্বাস নাই।
অনু বুঝতে পারছে না বাবার এই শরীরে থানায় যাওয়া ঠিক হবে কিনা।তবুও পরিবারের আর নিজের সিকিউরিটির জন্য থানায় যেতে রাজি হলো।অনু আর বাবার সাথে অনুর ছোট ভাইও গেল। থানার ওসির সাথে দেখা করেন অনুর বাবা।অনু সব কথা খুলে বলে ওসিকে। সব শুনে ওসি অনু ও তার বাবাকে বলে
— যদি পারেন আপনার মেয়ে ও জামাইকে একসাথে করে কথা বলতে দিন। তাদের মধ্যে সমাধান হোক। ছাড়াছাড়ি করায় কিছু লাভ হবে কি? সমাজে মেয়েকে নিয়ে সমস্যা হবে।মারধর তো করেনি আপনার মেয়েকে। যৌতুক চায়নি আপনাদের কাছে। ছোট বিষয় নিয়ে কেস করলে ডিভোর্স হবেই। ছেলেদের কি বলেন?আবারও বিয়ে করবে।কিন্তু আপনার মেয়ে তো সহজে ভালো জায়গায় বিয়ে দিতে পারবেন না। মানুষ বাজে কথা বলে বেড়াবে।

অনুর বিশ্বাস হচ্ছে না একটা থানার ওসি এমন কথা বলতে পারে! সবকিছু শোনার পর উনি এটাকে ছোট বিষয় বলছে।সমাজে কি নারীদের সম্মানের কোন দাম নেই? মানসিক নির্যাতনের কোন শাস্তি নেই? অনু এবার কঠিন হয়ে যায়। সে জোর দিয়ে বলে
— আমি আমার নিরাপত্তা চাই। দুই দিন আগে রাস্তায় আমার হাসবেন্ড আমার সাথে জোরাজোরি শুরু করে। তার সাথে জোর করে নিয়ে যেতে চায়।ঐ বাসায় আমার কোন সম্মান নাই। আমার হাসবেন্ড আমার কোন কথা বিশ্বাস করে না। আমার শাশুড়ি আমার আর শাহীনের মধ্যে সবসময়ই ঝগড়া বিবাদ লাগিয়ে রাখে।অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।আমাকে চরিত্রহীনও বলেছে তারা।এখনি এমন করে একটা বাচ্চা হওয়ার পর আমাকে দাসী হিসেবে রাখবে।আজ বাবা মা আছে। কাল কে আমার পাশে থাকবে?আমি এই সংসার করতে চাই না। আমি এমন অমানুষের সাথে থাকতে চাই না।আমি মানসিক নির্যাতনের কেস তো করবোই। ডিভোর্স দিব অবশ্যই। আপনি বলেন কি কি করতে হবে? ওসি বুঝতে পারলো অনু আর তার পরিবার সমোঝোতা করবে না।বাধ্য হয়ে শাহীনের বিরুদ্ধে কেস ফাইল করে।
অনু থানায় সেই দিনের পুলিশ অফিসারকে দেখে। উনিও অনুকে চিনতে পারে। অনুর কাছে থেকে উনি সব কিছু শুনে একজন ভালো উকিলের ঠিকানা দেন। অনু উকিলের সাথে কথা বলে। ডিভোর্স ফাইল করার সিদ্ধান্ত হয়।
অনুর আজ নিজেকে সাহসী আর কঠিন মনে হয়। নিজের প্রতি নিজের আস্থা ফিরে আসে।আজ অনু যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতে লড়তে রাজি।তার পরিবার তার সাথে আছে। সে একা নয় এখন। বাবার প্রতিটা কথা যাদুর মতো কাজ করেছে অনুর মনে। বাবা বলে কথা। যাকে মেয়েরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ মনে করে। যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। একটা মেয়ে তার বাবার রূপ তার স্বামীর মধ্যে দেখতে চায়। তার কিছুটাও যদি পায় তাতেও সন্তুষ্ট হয়ে থাকে।আজ অনু মন থেকে দোয়া করে এমন বাবা যেন সব মেয়েরাই পায়।সমাজের কথা ভাবলে অনুর জীবন শেষ হয়ে যেত।তার বাবা আজ শুধু তার কথা ভেবেছে।মা নিজের জন্য যা পারেনি তা অনুর জন্য করছে।সবসময়ই অনুকে সাহস দিচ্ছে। অনুর মনের কথা বুঝতে চেষ্টা করছে। অনু যেন কেন ভুল না করে সেটাও দেখছে।আত্মীয়স্বজনের শত কথা সহ্য করেও মেয়েকে আগুনে জ্বলতে ছেড়ে দেয়নি। ছোট থেকে মেয়েকে সাহসী আর শক্ত করে বড় করেছে।

শাহীন অনুকে কিছু না বলতে পেরে অনুর আত্মীয়স্বজনের কাছে নানান রকম বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে। অনুর চরিত্র নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। শাহীনের মা যা-তা বলে গালাগালি করেছে অনুকে।প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে এসব বলে যায়। অনেকে কল করে কাঁচা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়। হাজারো কষ্টের মধ্যে অনু মাস্টার্স পরীক্ষা দেয়।শাহীন যেন অনুর কোন ক্ষতি না করে তারজন্য অনুর বাবা এই অসুস্থ শরীরে অনুর সাথে পরীক্ষার হলে যেত। আবার পরীক্ষা শেষ হলে নিয়ে আসতো। অনুর ভাইয়ের সামনে পরীক্ষা থাকার কারণে হোস্টেলে চলে যায়।
অনু জানে সামনের পথ অনেক কঠিন হবে। কিন্তু নিজের প্রতি আস্থা থাকবে। পরিবারের জন্য সম্মান থাকবে আজীবন। শাহীন অনুর পরীক্ষার মধ্যে নানান বাজে কথার মেসেজ দিত।তার পরীক্ষা আর জীবন নষ্ট করার হুমকি দিত।শাহীনের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য বাজে বাজে মেজেস দিত।অনু তবুও হার মানে নাই। শাহীনের মা আর শাহীন বাদে বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজন আসে বিষয়টি মিটমাটের বন্দোবস্ত করতে।অনু আর তার বাবা সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে অনুকে আর ঐ নর্দমায় পাঠাবে না।শাহীন আর তার মা কোনদিনই ঠিক হবে না।হলে আজ এমন পরিস্থিতি হত না।যার সাথে সংসার করবে তার মানসিকতা এত নিম্নমানের হলে অনু কেন কেউ সংসার করতে পারবে না।এটার আর কোন সমাধান হবে না।তারা অবশ্য সামনে অনুর জীবন নষ্ট হবে বলে অনেক বুঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু অনুর বাবা মেয়ে ঘরে রাখবে। কিন্তু এমন অমানুষের সাথে মেয়ে দিবে না।

অনু শেষ পর্যন্ত শাহীনকে ডিভোর্স দেয়। নিজেকে অনুর মুক্ত আর স্বাধীন মনে হয়। মনের হারানো সব শক্তি ফিরে পায় অনু। অনু একটা মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি পায়। সাথে সাথে শুরু করে এমবিএ ক্লাস। নতুন জীবনের শুরু এটা।নিজেকে আর দূর্বল হতে দিবে না অনু্। নিজের তো অবশ্যই বাবা মায়ের দায়িত্বও পালন করবে।অনু চায়নি
অসহ্য যন্ত্রণায় থেকে একটা সংসার টেনে নিয়ে একটা বাচ্চার জীবন নষ্ট হোক।এমন পুরুষ যে যোগ্য স্বামী হতে পারেনি। সে যোগ্য বাবাও হতে পারে না।
এখনও আত্মীয়স্বজনেরা অনুর ডিভোর্স নিয়ে খোঁচা দেয়।সংসার করতে না পারার জন্য দায়ী করে দোষারোপ করবেন। অনু কেন বিয়ের পরই বাচ্চা নিল না।নিলে এসব হত না।বাচ্চা সংসারে মায়া বাড়ায়। অনুর শুধু নিজের ভবিষ্যতের চিন্তা করে সংসার ভাঙলো।এমন মেয়ে জীবনেও দেখেনি।মানসম্মান সব নষ্ট করলো। কিন্তু অনু থেমে থাকে না।

অনু এমবিএ কমপ্লিট করে ভালো একটা ব্যাংকে চাকরি পায়। সত্যি এখন অনু বাবা মা সহ ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করে। নিজে ভেঙে পড়া মেয়েটা আজ সংসারের হাল ধরতে পেরেছে। আর আজ সে সত্যি খুশি। সমাজে কে কি বলল তাতে তার কিছু যায় আসে না। তার আত্মসম্মান সে রক্ষা করতে পেরেছে। অনুর অফিসের এক ছেলে আসিফ অনুকে পছন্দ করে। অনুর কাছে আসিফের কথা বলা ও আচার-ব্যবহার ভালো লাগে। আসিফকে জানা জন্য সময় চায় অনু। আবারও কোন ভুল করতে চায় না অনু। যদিও তিন বছর হয়ে গেছে শাহীনের সাথে ডিভোর্স হওয়ার। কিন্তু এখনো সবকিছু কাঁটার মতো বিঁধে মনে। অনু আসিফকে তার সম্পূর্ণ অতীত খুলে বলে। আসিফের কোন সমস্যা নেই অনুর অতীত নিয়ে। তবুও অনুর সংশয় জাগে মনে। জীবনে অনুর সংসারের অভিজ্ঞতা তো ভালো নয়।

অনু আর আসিফ একদিন বসুন্ধরা সিটিতে মুভি দেখতে যায়। সেখানে শাহীনকেও দেখে অনু। সাথে একজন মহিলা।শুনেছিল শাহীন বিয়ে করেছে। এটা হয়তো শাহীনের বউ। শাহীনের পিছনে ছিল অনু।কিছু কথা শোনা যাচ্ছিল শাহীন আর তার বউয়ের। শাহীনের বর্তমান স্ত্রী কিছুতেই শাহীনের মায়ের সাথে থাকবে না। হয় গ্রামে পাঠিয়ে দিক তার মা’কে, নয়তো কোন বৃদ্ধাশ্রমে।এত অশান্তি আর অস্থিরতা শাহীনের বউ মেনে নিবে না। শাহীন রাজি হয়েছে মা’কে বলবে সিদ্ধান্ত নিতে।সে কোথায় থাকবে।
অনু তখন ভাবছিল মানুষ যা করে তার ফল সে ঠিকই পায়, আজ অথবা কাল।তবে আজ এসবকিছু অনুর কাছে কোন বিষয় নয়।যা হয়েছে ভালো হয়েছে।

স্বামী মানে একটা নিরাপত্তার জায়গা।একটা আস্থার মানুষ। একটা দেয়াল যা সব বিপদ থেকে তাকে প্রতিরোধ করবে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে অনু ঐ সংসারে নিজের জায়গা পায়নি। রক্তের সম্পর্কগুলো ছেড়ে নতুন সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করতে করতে নিজে ভেঙে গেছে। শাহীন অনুর ভালোবাসা বা আস্থার যোগ্য যে না তা অনু আর তার পরিবার বুঝতে পারে। তাই মেয়েকে সারাজীবনের জন্য জ্বলেপুড়ে মরতে দিতে চায় না। একটা সম্মানের জায়গা যে কোন বউয়ের চাওয়ার থাকে।হোক শিক্ষিত, হোক মূর্খ।তাতে কিছু যায় আসে না।পরিবারের অন্য সবার মতো বউদেরও অধিকার থাকবে।তাদের নিজস্ব ভালো লাগা মন্দ লাগা থাকবে।
মা ছেলের সম্পর্ক যেন সুন্দর আর পবিত্র। ঠিক তেমনি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কও সুন্দর আর পবিত্র। সম্পর্ক গুলো অটুট থাকুক এই আশায় জীবন গড়তে হবে। একটা সংসার কখনো একজনের ইচ্ছার উপর নির্ভর করতে পারে না। পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে ভালোবাসা মায়া থাকতে হয়। স্বামীকে তার বউ আর মায়ের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার বিষয়টা প্রথা হয়ে গেছে। যা খুব ঘৃণার বিষয়। মা তার জায়গায়, আর বউ তার জায়গায়। মা’কে সন্তুষ্ট করতে বউকে পায়ের তলায় রাখাও কোন ধর্মের কাজ নয়।

আর একটা মেয়ে শিক্ষিত হলে বা স্বাবলম্বী হওয়ার সংসারের উন্নতি হয়। খারাপ হয় না কখনো। স্বাবলম্বী একটা মেয়েকে অশান্তি বা শারীরিক মানসিক নির্যাতন সহ্য করে তিলে তিলে মরতে হয় না সংসারে। কারণ তার নিজের একটা অস্তিত্ব থাকে। একা টিকে থাকার সাহস আর শক্তি থাকে মনে। সম্মান হারিয়ে সংসারে পঁচে মরতে হয় না।তাই বাবা মা যেন স্বামীর শিক্ষা বা অর্থ সম্পদের উপর নির্ভর না করে মেয়েকে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলে। যাতে মেয়েরা কঠিন পরিস্থিতিতেও যেন টিকে থাকার সাহস পায়। মেয়ের বিয়ের সময় অর্থ সম্পদের খোঁজ খবর সবাই নেয়। কিন্তু কেমন পরিবার বা পরিবারের মানুষজন কেমন তাও যেন খোঁজ নেয়।এমন হাজারো শাহীন সমাজে বুক ফুলিয়ে হাঁটে। তাদের মানুষ সালাম করে। মেয়েদের নিজের জীবন নিয়ে ভাবতে হবে।একটা স্বামীর পরিচয় বা বিলাসবহুল জীবনের চেয়ে মানসিক শান্তি ও আত্মসম্মান জরুরি।

(সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও আন্তরিক ভালোবাসা রইল। এতটা সময় দিয়ে সাথে থাকার জন্য সত্যি কৃতজ্ঞতা রইল। সমাজে এমন হাজারো অনু আর শাহীন আছে। সমাজ বা বিয়ের দোহাই দিয়ে মেয়েদের জীবন নষ্ট করবেন না। এতে নতুন প্রজন্মও সুন্দর পরিবার বা পরিবেশ পায় না।)
(সমাপ্ত)

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
100 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social profiles